অরুণিমা ভট্টাচার্য দত্ত- আধ্যাত্মিকতার দিকে অনায়াস ঝোঁক,সব রকমের শিল্পকে মর্যাদা দেওয়া,স্বপ্ন দেখার সাহস,পরিচ্ছন্নতা বোধ,নিঃস্বার্থে সেবা করা,ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস।
তোমরাও বল সবাই।
দোয়েলপাখি দাশগুপ্ত-ভালর তালিকা কখনো শেষ হবে
না।
পারমিতা চক্রবর্তী - যে কোনো দায়িত্বে নিজেকে
উৎসর্গ করা,ছোট কাজও নিখুঁত ভাবে করা,অকৃত্রিম কিছু পাবার লক্ষ্য- সবই স্কুলের
কাছে শিখেছি।
দ্যুতি মুস্তাফি- আমিও কিছু যোগ করি। ধৈর্য
আর লেগে থাকা ব্যাপারটা। সাথে ওই হাল ছেড়ো না এইটাও।
অরুণিমা- ভালোবাসতে শিখেছি,ভীষণ ভাবে,গভীর ভাবে কাউকে বা কোনওকিছুকে আত্মহারা হয়ে
ভালোবাসা। এ শিক্ষাও আমার ইস্কুলই
শিখিয়েছে আমাকে।
শ্রীপর্ণা দত্ত- তোমাদের কথাগুলো সমর্থন
করছি। কিন্তু আর কি কিছু নেই? আওয়াজ না করে হেঁটে যাওয়া, জোরে কথা না বলা।
দোয়েলপাখি -
১. পড়াশোনাটাকে ভালবাসতে পারা,টিপিকাল স্টুডিয়াস হয়ে না থেকেও বিষয় গুলোকে
নিয়ে খেলা এটা প্রথম শিখেছি আমার স্কুল থেকে। যা পরে কলেজ ও পরবর্তী সমস্ত শিক্ষানবিশ
জীবনে কাজে লেগেছে। এখনও লাগে।
২. বিভিন্ন মানসিকতার মানুষের সাথে কথা বলা
এবং মানুষ চেনা... (ইউনিয়ন মেম্বার হিসেবে এই ট্রেনিংটা কাজে লেগেছে পরে,একসাথে অনেককে নিয়ে কাজ করতে গিয়ে)
৩. বড়দের সম্মান দিতে শেখা... ছোটদেরও...
৪. বেসিক ভদ্রতা
৫. পরিচ্ছন্নতাবোধ
৬. আধ্যাত্মিকতা - সকলের মধ্যেই কিছুটা থাকে। সেটাকে খানিকটা উস্কে দেওয়ার মত পরিবেশ
স্কুল থেকেই পেয়েছি.. ধর্ম,পুরাণ,প্রাচীন ভারত - এই সব বিষয় নিয়েও অনেকের থেকে আমরা বোধহয়
একটু বেশি জানি।
তথ্য
মুখস্থ করা দিয়ে না,ভেতরে এই বোধগুলোকে বহুদিন লালন করেছি... নিজের মত গড়েপিটে
নিয়েছি,
এটা
বোধহয় অন্য কোনও স্কুলে এভাবে হবে না...
৭. নিয়মানুবর্তিতা।
৮. শ্রোতা হতে শেখা.. শুধু নিজের কথা বকরবকর
না করে অন্যকেও বলতে দেওয়া। তার মতামত শোনা.. সবাইকে কিছু না কিছু গুরুত্ব দেওয়া..
সহমর্মিতা - এগুলোও...
৯. "সাম্য" কথাটাকে ভেতর থেকে
খানিকটা চেনানো... জাতপাত,ধর্ম,পয়সাকড়ি,সামাজিক অবস্থা এসব দিয়ে কাউকে বিচার না করা (যদিও এটা পরে
অনেক ক্ষেত্রে বাঁশ হয়েছে.. সবাই সমান নয় মোটেও.. কিছু লোক আছে এইসব নির্বিশেষে
মহা শয়তান হয়,তাদের কিভাবে চিনব সেটা
স্কুল শেখায়নি)...
১০. সংস্কৃত উচ্চারণ
১১. কমন একটা সিস্টারহুড বা সিবলিংহুডও বলা
যায় ব্যাপক অর্থে। নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি,হিংসা, খেয়োখেয়ি,টক্কর লাগানো - এইগুলোও আমাদের স্কুলে খুব কম
ছিল। আমরা ভালো দিকগুলো নিয়েই এত ব্যস্ত থাকতাম যে এসব বাজে দিক আমাদের সময় নষ্ট
করেনি বেশি। স্কুলের পরিবেশে এমন একটা গ্রেসফুল ডিসেন্সি ছিল যে এইসব ক্ষুদ্রতা
আমাদের গ্রাস করেনি... ধন্যবাদ আমাদের স্কুলকে।
অনেক বড় হয়ে গেল? এই লিস্ট তো ফুরোবেই না।
মন্দাক্রান্তা দাশগুপ্ত- নিজের প্রতি বিশ্বাস,সবাইকে ভালোবাসা,কাউকে ছোট না ভাবা,যেকোনও ভালো কাজে নিজের ১০০% দেওয়া,অল্পসল্প আধ্যাত্মিকতাও,শীতকালে খালি পায়ে থাকতে পারাও। সবরকম পরিবেশে, পরস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়াও তো স্কুলই
শিখিয়েছে। কিন্তু জানো,স্কুলে পড়ার সময় সেভাবে মানুষ চিনতে পারিনি। তখন তো জীবন
জুড়ে শুধুই স্কুল। তাই পরে অনেক ধাক্কা খেয়েছি। কিন্তু সেসবকে কাটিয়ে ওঠার জন্য যে
মনের জোর দরকার ছিল,তা তো স্কুলের কাছ থেকেই পাওয়া।
পৌলমী স্যানাল- তোর মত আত্মবিশ্বাস... না,আমি তো শিখিনি। আমি বড়ই কম শিখেছি।
অরুণিমা- বাংলা এবং সংস্কৃত শব্দ উচ্চারণের
ব্যাপারে খুঁতখুঁতানিটা আজও রয়ে গেছে রে। এব্যাপারে তো প্রায় নাক উঁচুর পর্যায়ে
পৌছে গেছি।
পারমিতা- ঠিক বলেছিস অরু। আমাদের নিবেদিতার
মেয়েদের ভাষা এবং উচ্চারণের শালীনতা,ভাষার গাঁথুনি.. সবার ভীষণ ভালো। আমার
গাঁথুনি একটু আলগা হয়ে গেছিল। আড্ডা দিতে দিতে মনে হয় ফিরে এসেছে।
শতক্ষী চক্রবর্তী- সবাই তো সবই বলে দিয়েছ।
আমি শুধু দু'টো পয়েন্ট বলি এর সাথে।
ভালোবাসতে পারা আর সম্পর্কের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া।
সিলভা সরকার- আমার মনে হয় নিজের প্রতি
বিশ্বাসটা আমায় স্কুল দিয়েছে,আর অবশ্যই মানবিকতার শিক্ষা। কিছুতেই অভদ্র হবার সাহস দেখাতে
পারিনি। যখন প্রয়োজন হয়েছে তখনও না। আর একটা জিনিষ হল দৈনন্দিন জীবনে পরিষ্কার
পরিচ্ছন্ন থাকা। আজও নিজের মেয়ের পেন্সিল শার্প করে সেই বর্জ্যটুকু যেখানে সেখানে
ফেলতে পারি না।
No comments:
Post a Comment