শর্মিলা রায়: নিবেদিতা স্কুলের হোস্টেল। আমি কোনওদিন থাকিনি কিন্তু খুব কৌতূহল হতো ওই হোস্টেলজীবনটার প্রতি। তাই যারা কোনও না কোনও সময়ে হোস্টেলে ছিলে,তোমরা প্লিজ নিজেদের গল্প শেয়ার কর…হোস্টেল জীবনের রুটিন,ভালো লাগা,মন্দ লাগা…সবকিছু।
সঞ্চারী চক্রবর্তী:
বিশেষত ওই স্টাইলে শাড়ি
পড়া!
সায়ন্তনী ভট্টাচার্য:
হোস্টেল-লাইফ শুরুতে খুব কঠিন
ছিল, বিশেষত আমার মতো মেয়েদের
জন্যে যারা দিল্লী থেকে
কলকাতায শিফট হয়ে তারপর
নিবেদিতা স্কুলে অ্যাডমিশন নিয়ে
হোস্টেলে যেত। সকাল
পাঁচটাতে গীতাপাঠ,সন্ধেবেলায় ভজন।কিন্তু একবার অভ্যস্ত হয়ে গেলে
আসত দুস্টুমি আর মজার পালা। মনে আছে একবার
পড়তে বসে গল্প করার
জন্য সেভেনের সব মেয়েদের
শাস্তি হয় ঠাকুঘরের ওপরের
ছাদে রাত এগারোটা অব্দি
দাঁড়িয়ে থাকার। আমরা
চোদ্দজন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েও পিংপং
বল খেলছিলাম লুকিয়ে। গল্প
করাও বন্ধ হয়নি নিজেদের
মধ্যে। আমার এক ক্লাসমেট
রাত্রে ঘুমের মধ্যে হাঁটছিল।কোনও এক দিদি, বোধ হয়
স্বরূপাদি কোথায় যাচ্ছে জিজ্ঞেস
করায় ঘুমের ঘোরে বলে "ভূগোলের
জল আনতে চললাম।"আমরা
অনেক লিবারাল দিদিদের পেয়েছিলাম
যারা সিনেমার গান গাইতে
বাধা দিতেন না। যেমন
রাজশ্রীদি(অক্ষয়প্রাণা মাতাজী)।আমি বাংলা গানের অন্তাক্ষরী
পারতাম না তাই আমাকে
হিন্দি ছবির গান গাইতে
কখনও বাধা দেননি। রঞ্জনাদিও
দিতেন না বাধা। আমাদের
তো দু’-একটা ভালো বাংলা ছবি দেখতেও
দেওয়া হয়েছিল। মহাভারত
দেখতে দেওয়া হতো নিয়মিত।তবে আমি ক্লাস সেভেনে
হোস্টেল ছেড়ে দিই।তারপর জানি না।
শর্মিলা রায়:
আমার দিদির থেকে ওর এক বন্ধুর
হোস্টেলের গল্প শুনেছিলাম।জানি না যদিও কতটা
সত্যি,তবু শেয়ার করছি!
ওর কোনও বন্ধু রবি শাস্ত্রীকে
চিঠি লিখেছিল।খামে
ভরে উপরে লিখেছে রবি শাস্ত্রী,তারপর
হারিয়ে ফেলেছে। চিঠি
সোজা হোস্টেলের যিনি দায়িত্বে (জানি না
তিনি কে ছিলেন)তাঁর
হাতে পড়ে। তিনি
মেয়েটিকে ডেকে জিজ্ঞেস করেন
"কাকে
লিখেছ চিঠি?" সে বলে "দিদি…আমার
দাদুকে"। তো তিনি
বকে বলেছিলেন "জানো না দাদুর
নামের আগে ‘শ্রী' লিখতে হয়?" বলে খামের উপর লাল পেন দিয়ে
‘শ্রী'লিখে ফেরত
দিয়েছিলেন।
সায়ন্তনী ভট্টাচার্য:
এইটা বোধহয় তোমরা জান না যে ‘আগমনী'আমাদের ব্যাচের একটি
ট্যালেন্টেড মেয়ে জয়িতা চক্রবর্তী
শুরু করেছিল! প্রথমবার হয় ১৯৮৮-এ। আমি পরপর দু’ বছর কার্তিক
সেজেছিলাম। ক্লাস সেভেনে
আমি হোস্টেল ছেড়ে দেব বলে আমায়
উমার রোল করতে দেওয়া
হয়। জয়িতা চক্রবর্তীর
আমাদের সকলের তরফ থেকে
একটা বড় ধন্যবাদ প্রাপ্য।
শর্মিলা রায়:
আচ্ছা,আগমনীতে ঠাকুর
শুধু হোস্টেলের মেয়েরাই হতো বুঝি?
আমি কোনওদিন এই বিষয়
নিয়ে এভাবে ভাবিনি।
মধুজা ব্যানার্জী:
আমি একবার স্কুলে দুর্গা
হয়েছিলাম। সেবার প্রতীক্ষা
হয়েছিল লক্ষ্মী। প্রতীক্ষা
যে বার স্কুলে দুর্গা হয়,সেবার
পায়েল সরকার,অধুনা নায়িকা,সে হয়েছিল
লক্ষ্মী।তারপর পায়েল
দুর্গা হয়েছিল। প্রতীক্ষা
এখন আমার মাসতুতো ননদ,তখন যদিও
তার কোনো আভাস পাইনি!
পরমা লাহিড়ী:
আমার দেখা স্কুলের সেরা
দুর্গা ছিল মধুজা।
মধুজা ব্যানার্জী:তোর মুখে
ফুল চন্দন পড়ুক,পরমা।আমার খালি একটাই দুঃখ,ওটার
কোনও ছবি নেই আমার
কাছে।
চিরশ্রী মজুমদার:মধুজাদি,দুর্গা
হওয়ার সময়ে তুমি কোন ক্লাসে
ছিলে? আমরা দেখেছি কি?
মধুজা ব্যানার্জী:তখন ক্লাস
৮/৯ এ পড়তাম। আমি আলতা নিয়ে আসতে
ভুলে গিয়েছিলাম।কমলা
বসুদি বড় মিনুদির থেকে
লাল কালী চেয়ে নিয়ে
হাতে পায়ে লাল রং করেছিলেন।
সঙ্গীতা অগ্নিহোত্রী
ব্যানার্জী: আমি হোস্টেলে থাকতাম।১৯৮৪ ব্যাচ। জ্যোতিপ্রাণাজী ছিলেন ইন চার্জ। এখন ভেবে
দেখলে মনে হয়-কী সুন্দর
একটা সময় কাটিয়েছি ওখানে। কোনও খারাপ অভিজ্ঞতার কথা মনে করতে
পারি না।
দোয়েলপাখি দাশগুপ্ত:
অমৃতার হোস্টেল নিয়ে অনেক
দুঃখ ছিল। ডায়েরিতে
লিখত সেসব।
দ্যুতি মুস্তাফি:
একটা প্রশ্ন…হোস্টেলে
কি আমিষ চলত?
রুনা মুখার্জি:
বড় মিনুদি আমাদের এই প্রশ্নের
উত্তরে বলেছিলেন যে রামকৃষ্ণ
সারদা মিশনে আমিষ চলে কারণ
শ্রী শ্রী ঠাকুর নাকি
আমিষ-নিরামিষের পার্থক্য করতেন
না। উনি বলেছিলেন
যে ভগবান ভেবেচিন্তেই যার যা খাবার
তা ঠিক করেছেন। না খেলে
প্রকৃতির ভারসাম্য থাকবে না।
সঙ্গীতা অগ্নিহোত্রী
ব্যানার্জী: আমাদের সময়ে হোস্টেলে
এক ওড়িয়া রাঁধুনি ছিল,দারুণ
রান্না করত কিন্তু।
চান্দ্রেয়ী লাহিড়ী:
আমি তিন বছর হোস্টেলে
ছিলাম।সবটা মোটেও
সুখকর ছিল না। ভোরে ওঠা, নিজের বাসন
মাজা,ঘর ঝাঁট দেওয়া,জামাকাপড়
কাচা ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে বেশ একটা
মজা ছিল, সবাই একসাথে
হুল্লোড় করতাম। আমি ভয়ানক
দুষ্টু ছিলাম। সদানন্দপ্রাণাজীকে খুব জ্বালিয়েছি।
সুশান কোনার:
তোমরা কয়েক মাস আগে রামায়ণ
নিয়ে আলোচনা করছিলে, হঠাৎ
চোখে পড়ল। এই প্রসঙ্গে
বলি, শ্রদ্ধানন্দপ্রাণাজীর মতো বিবেচক,
ফেমিনিস্ট মানুষ আমি খুব কমই দেখেছি। উনি ব্যস্ত থাকতেন বলে বেশিরভাগ
রামনবমীতে পাঠ করতে পারতেন
না, কিন্তু যে ক’বার শুনেছি-তাতে রামকে
ভীতু,কাপুরুষ,খালি মেয়েদের
মতো কাঁদে,সীতার প্রতি
সম্পূর্ণ আনফেয়ার- এই ব্যাপারগুলো
খুব স্পষ্টভাবে বলতে শুনেছি। আমাদের দুর্ভাগ্য, উনি খুব বেশি
লিখে যাননি, বা ওনার
বক্তৃতা সেরম ভাবে রেকর্ড
করা হয়নি।কিন্তু
রামকে নির্বিচারে পুজো করা যায় সেকথা
ঠিক না,এমনকি মিশনের
চৌহদ্দির মধ্যেও।ওনার
কথা আরেকটু বলি। ক্লাস ফাইভে ভর্তি হয়েছি।জানুয়ারী মাস। পুরস্কার
বিতরণী হচ্ছে। হোস্টেলের
খুকিরা তিনতলায় ঠাকুরঘরের সামনের
বারান্দায় বসে অনুষ্ঠান দেখছে। সেই বছর রাজ্যপাল এ এল দিয়াজ
এসেছিলেন। শ্রদ্ধানন্দপ্রাণাজী ইংরেজিতে
একটা লম্বা ভাষণ দিলেন। ওই তিনতলা থেকে আধশোনা
কথা একবর্ণ বুঝিনি, কিন্তু
তার ভাব আজ এই চল্লিশ
বছর পরেও প্রাণে লেগে
আছে!
সঙ্গীতা অগ্নিহোত্রী
ব্যানার্জী: নাহ আমি শ্রদ্ধানন্দপ্রাণাজীর কোনো বক্তৃতা শুনিনি।
সুশান কোনার: শ্রদ্ধানন্দপ্রাণাজীকে নিয়ে একটা ব্যক্তিগত
গল্প আছে।আলোদি (জ্ঞানদাপ্রাণা
মাতাজী)এখনও সেকথা বলেন। আমি ফাইভে ঢুকেছিলাম ন্যাড়া-মাথা
নিয়ে (আমার মা প্রতি
বছর ন্যাড়া করে দিত,
ভালো চুল হবে বলে!
এখন অবশ্য সে চুলের
সংখ্যা আঙুলে গোনা যায়)। হোস্টেলে
খাবার পরে বাসন ধুয়ে
আমরা যেখানে রাখতে যেতাম
সেখানেই সন্ন্যাসিনীরা খেতে
বসতেন। আমি একদিন
সেরকম বাসন রাখছি,শ্রদ্ধানন্দপ্রাণাজী খুব গম্ভীর গলায় বড়দিকে
বললেন "কালো,এই ন্যাড়া
মেয়েটার কি পরের জানুয়ারির
মধ্যে চুল গজাবে? নাহলে
তো একে সিক্সে প্রমোশন
দেওয়া যাবে না।"
ওই বয়েসে আমি বড্ডো
বোকা ছিলাম। শুনে
তো আমার বুক ধুকপুক
শুরু হয়ে গেছে। শেষ অবধি আলোদি
আমার দশা দেখে উদ্ধার
করলেন। একটু বড় হওয়ার
পর শ্রদ্ধানন্দপ্রাণাজীর হিউমরের
কিছু নমুনা পেয়েছি। ওঁর কথা শোনবার
জন্যে উদগ্রীব হয়ে থাকতাম। যেসব স্পেশাল দিনে ওঁর ঘরে প্রণাম
করতে যেতাম সেগুলো আমার
কাছে খুব বিশেষ ছিল। শুদ্ধ ইন্টেলেকচুয়াল আনন্দর
বোধয় ওখানেই শুরু। যদিও
এভাবে তখন বুঝতাম না।
সায়ন্তনী ভট্টাচার্য:
হোস্টেলে থেকেছি বলে অনেক
মাতাজিকে নিজের মায়ের মতোই
মনে হতো। একজন
ছিলেন রাজশ্রীদি, যাঁকে আমরা
খুব কম দিনের জন্যে
পেয়েছিলাম। একবার অনেক
রাত্রে ইলেকট্রিসিটি চলে গেছে,আমরা
ঠাকুরঘরের ওপরের ছাদে বসে দিদির
কাছে গল্প শুনছি অন্ধকারে।কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি
না। চোখ খুলল
দিদির ডাকে। দেখি
ওঁর কোলে মাথা রেখে
ঘুমিয়ে পড়েছি,আর উনি মাথায়
হাত বুলিয়ে ডাকছেন ঠিক মায়ের
মতো।আর একজন
ছিলেন সুদীপ্তাদি (অশেষপ্রাণা
মাতাজী)। তাঁকেও আমরা
পেয়েছি মোটে এক বছর। আমার শোওয়া এমনিতে ভালো
ছিল। কিন্তু কী জানি
কোনও কারণে এর ব্যতিক্রম
হয়েছিল একদিন। সকালে
ওঠার পর সুদীপ্তাদি আর অমিতাদি
আমাকে ডেকে বললেন কাল রাত্রে
কি ঘুমের মধ্যে যুদ্ধ
করেছিলে? আমি না বুঝতে
পেরে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে
আছি, তখন অমিতাদি বুঝিয়ে
বললেন। গরমকাল বলে শোয়ার
ঘরের দরজা বোধহয় খোলা
ছিল। আমি গড়াতে
গড়াতে অথবা ঘুমের চোখে
উঠে গিয়ে বাইরের বারান্দায়
শুই।সুদীপ্তাদি রাত্রে
ওপথে যেতে গিয়ে আমায়
দেখে ঘুম না ভাঙিয়ে
কোলে করে তুলে এনে বিছানায়
শুইয়ে দেন। বড্ডো
ভালো লেগেছিল ব্যাপারটা।
প্রদীপ্তা ভৌমিক:
সকালে ঘুম থেকে ওঠা আর বিকেলে
খেলতে খেলতে খেলা বন্ধ
করে ভজনে যাওয়ার ব্যাপারটা
ছাড়া হোস্টেল লাইফ দারুণ
উপভোগ করেছি। আমাদের(১৯৮০-৮৫)হোস্টেল
সুপার ছিলেন জ্যোতিপ্রাণাজী। উনি আমাদের
যথেচ্ছ বকাঝকা করতেন কিন্তু
অন্য কেউ(মানে স্কুলের
দিদিরা বা অন্য কেউ)যদি কিছু
বলতেন উনি একদম নিজের
মেয়ের মতো আগলে রাখতেন। খেলা ছেড়ে ভজনে যেতে
কারওরই ভালো লাগত না। তো একদিন জয়লক্ষীদিকে
(উনি তখন ভজন গাইতেন)সে কথা বলাতে
উনি এমন অবাক হলেন
যেন পৃথিবীতে এমন অসম্ভব
ঘটনা ঘটে কী করে জানা
নেই। শ্রীশ্রীমার জন্যে
গাইতে ভালো লাগে না এও কি সম্ভব?
ওঁর প্রতিক্রিয়া দেখে (প্রায়
কেঁদে ফেলেছিলেন)আমরাই
ওঁকে সান্তনা দিতে শুরু
করি আর কি!
সায়ন্তনী ভট্টাচার্য:
আমাদের সময়কার হোস্টেল ওয়ার্ডেন
ছিলেন সদানন্দপ্রাণাজী। প্রায়
ষোল বছর বাদে ২০১০
এ স্কুলে যাই যখন, উনি আমাকে,আমার
ক্লাসমেট কাকলিকে এবং আমার
হাজব্যান্ডকে খুব আদর যত্ন করে নিজে
হাতে চেয়ার টেবিলে বসিয়ে
পরিবেশন করে খাইয়েছিলেন। এত পদ রান্না
হয়েছিল যে হোস্টেলে থাকাকালীন
সেটা স্বপ্নাতীত ছিল। উনি নিজের
হাতে দু’ দুটো
তরকারি রেঁধেছিলেন। চোখে
জল এসে গেছিল। বিশ্বাস
হচ্ছিল না উনি সেই কুড়ি
বছর আগেকার স্ট্রিক্ট ওয়ার্ডেন!
নন্দিনী দত্ত:
হোস্টেল-লাইফ ছিল টক,ঝাল,মিষ্টির
মিশেল।আমি সবচাইতে
দুষ্টুদের মধ্যে একজন ছিলাম। সারাদিন জ্যোতিপ্রাণাজীর বকা-"দাঁড়িয়ে
দঁড়িয়ে ফেল করবে"। কিন্তু
কি যে মিস করি!
সেমন্তী ভট্টাচার্য:
আমি তিন বছর ছিলাম
হোস্টেলে। অনেক বাধানিষেধের
মধ্যেও হোস্টেলে দু-তিনটে
অসাধারণ জিনিসের স্বাদ পেয়েছি। হাফ-ইয়ারলি পরীক্ষার পর আর পুজোর
ছুটি শুরুর আগে কয়েকটা
দিন ছিল ভীষণ সুন্দর। কুমোরটুলিতে ঠাকুর গড়া দেখাতে
নিয়ে যেতেন সদানন্দপ্রাণাজী। আর ছিল সারা
দিনরাত রিহার্সাল দিয়ে'আগমনী'
করা।
রোমি মিশ্র
সিং: দুষ্টু মেয়েদের লিস্টে
বেশ ওপরের দিকে থাকতাম
আমি। প্রতি রোববার
ছিল আমার গার্জিয়ান কল। বাবাকে যত বলতাম সাদানন্দপ্রাণাজীর সাথে একদিন দেখা না করলে
কী হয়!তা কার কথা কে শোনে!
বিশ্বকর্মা পুজোর সময়ে ঘুড়ি
উড়ত চারদিকে। আমরা
প্রতি ব্যাচ থেকে কাটা
ঘুড়ি জোগাড় করতাম। গুনে
গুনে দেখতাম কারা বেশি
জোগাড় করল। একবার
করেছিলাম কি,এই ঘুড়ি
জোগাড়ে ফার্স্ট হব বলে আঁকশি
নিয়ে ছাদে দাঁড়িয়ে ছিলাম। সুতো দেখলেই ধরে টান। শেষে আশপাশের বাড়ি থেকে
এসে নালিশ করেছিল যে সব ঘুড়ি
আমরা ছিঁড়ে দিই।তারপর কী বকা কী বকা!পাঁচতলার
ছাদ ছিল ভীষণ প্রিয়
জায়গা।মাঝেমাঝেই ওখানে
নিয়ে যাবার জন্যে সাদানন্দপ্রাণাজীর কাছে আবদার করতাম।
গার্গী চৌধুরী:
তোদের নিশ্চই মনে আছে যে আমরা
সবাই মিলে
চন্দ্রলেখার বোর্নভিটা না মাইলো
কী একটা খেয়েছিলাম আর তারপর
ধরা পড়ে উঠোনে কান ধরে ওঠ-বস।
রোমি মিশ্র
সিং: এই গার্গী, এইটা
তো দারুণ মনে করিয়েছিস!!
একদম ভুলে গেছিলাম রে। তখন খুব লজ্জা করেছিল
আর রাগ হয়েছিল কিন্তু
এখন বেশ হাসি পাচ্ছে।
চন্দ্রলেখা কোলে:আমি আজও
হোস্টেলের দিনগুলো মিস করি বিশেষত
ওই ‘আগমনীর’ দিনগুলো।
হোস্টেলে থাকাকালীন সবথেকে বিভীষিকাময় ছিল একাদশীর দিনগুলো। ওই দিন খন্ডন ভব হওয়ার পর শুরু হত রামনাম। পুরো একটি বই গেয়ে শেষ করতে হত। দুপুরে টিফিনে জিলিপী মানেই রামনাম। তাহলেই মাথায় হাত। আমি খন্ডন ভব বাজাবার দায়িত্বে ছিলাম। ওই দিনগুলোয় তাই খন্ডন ভবর স্পিড্ বেশ বাড়িয়ে ধরতাম যাতে তাড়াতাড়ি সব শেষ হয়। এই নিয়ে দিদিদের কাছে কত বকা খেয়েছি। কিন্তু স্পিড্ একটুও কমেনি শেষ দিন অব্দি।
ReplyDeleteEkahane শিবলোকপ্রাণাজী কে নিয়ে কেউকিছু লেখোনি কেন??
ReplyDelete