আমি ময়ূরপঙ্খী দেখিনি কখনও।
কাদায় আমার পা আটকে গেছে – আজ তা প্রায় কয়েকশো যুগ হল –
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখি,
জংলা ভিজে মাটিতে কাদাখোঁচার পায়ের লুকোচুরি।
দেখি খেয়াপারের নিস্তব্ধতা কেমন করে
দোলা দিয়ে যায় মাছধরার জালে।
দোলা দিয়ে যায় মাছধরার জালে।
কান পেতে শুনি ঝাউবনের মর্মর গান,
অচিন পাখির গোপন কূজন।
ক্লান্ত কাঁধের ওপর এক আকাশের ভার,
বসে পড়ি তাই নোঙর ফেলে ঘাটে।
হঠাৎ !
অবাক চোখে ঝাপসা দেখি ময়ূরপঙ্খীর স্বপ্ন,
আমার থেকে অনেক দূরে,
আমার নাগাল থেকে অনেক অনেক দূর দিয়ে,
চলে যায় ময়ূরপঙ্খী এক।
কি আশ্চর্য !
তার পাল নেই, দাঁড় নেই কোনও –
আছে দুটি পাখা – রঙিন, মায়াবী সুন্দর।
সে যে সাত সমুদ্র তেরো নদী সাঁতরে হয় না পার;
তার উদার যাতায়াত যে আকাশগঙ্গা-পথে।
কি ভীষণ সে তার কায়া, কি বিরাট সে তার খ্যাতি!
নিজেকে কেমন ছোটো লাগে হঠাৎ ।
ছোটো মনে হয় এক চিলতে আমার সত্তাটাকে।
আমার খেয়া; ছেঁড়া পাল, নোঙর করা ঘাটে-
হাল ভাঙা আমার ছোট্ট খেয়াখানা।
মনটা হু হু করে ওঠে হঠাৎ ...
স্বপ্নকে জোর করে চোখ থেকে মুছে ফেলতে
সারা গায়ে মুখে মাখি নোনা জল, কাদার প্রলেপ।
স্বপ্নকে জানতেই হবে-
আমার চোখে ময়ূরপঙ্খীর ঠাঁই নেই,
ঠাঁই নেই...
উঠে দাঁড়াই,
সোজা তাকাই আকাশের চোখে চোখ রেখে,
চাই স্বপ্নের সাথে জন্মের বিচ্ছেদ।
খসে পড়ে সুন্দরীর পাখনা সাথে সাথে,
বুক জুড়ে আমি অনুভব করি
অঙ্গহানির যন্ত্রণা – আমার, নাকি তার;
কার জান?
যাহোক,
তবু তার উড়ান থামে না তো!
হাজার প্রশ্ন ভিড় করে আসে চোখে;
আর আমি,
রসাতলে নোঙর ফেলে তার ডানার দিকে তাকিয়ে থাকি...
ঈশানী রায়
২০০৮
ishani, tokhon bolini bodhoy mail receive korar por, kobita ta vison pochondo hoyechilo amar..
ReplyDeletekhub bhalo :)
ReplyDeleteKhub bhalo
ReplyDelete