 |
Pattaya |
বিদেশ ভ্রমণ তাও আবার কম খরচে, এখন আর স্বপ্ন নয়। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্কক এবং পৃথিবীবিখ্যাত পাটায়া বিচ ঘুরে আসা যায় অনায়াসে ২০০০০ টাকায় তাও আবার বিমান ভাড়া সহ। আমাদের লেহ্ লাদাখ ঘুরতে এর থেকে বেশি খরচ হয়।
 |
Bangkok Airport |
আমরা ব্যাঙ্কক পৌঁছলাম স্থানীয় সময় সকাল ১০.৪০ এ। ইমিগ্রেশন সেরে বাইরে বেরিয়ে আমাদের এজেন্টের দেখা পেলাম। কিন্তু এয়ারপোর্ট থেকে পাটায়া যাবার বাসের দেরী তখনও প্রায় ৪০মিনিট। চকচকে ঝকঝকে এয়ারপোর্ট কী সুন্দর সাজানো। আমাদের কলকাতার এয়ারপোর্ট-এর কথা ভেবে লজ্জা হল। হাজার হাজার লোক, পৃথিবীর অন্য কোনো এয়ারপোর্ট-এ একসঙ্গে এতো টুরিস্ট দেখা যায় বলে আমার মনে হয় না।
এয়ারপোর্ট-এর ফুড প্লাজাটি আমার দারুণ লেগেছে। আমরা থাই ডিশ খেয়ে রওনা দিলাম পাটায়া। বাসে ২ ঘন্টার রাস্তা পেরিয়ে যখন পৌঁছলাম তখন ঝিরঝির বৃষ্টি পড়ছে। হোটেল থেকে ইচ্ছে থাকলেও বেরোনো গেল না ২ বছরের অদ্রিজকে নিয়ে। সমুদ্র দেখে সময় কাটিয়ে যখন নীচে এলাম বৃষ্টি থেমে নীল আকাশে সন্ধ্যা নেমেছে। টুকটুক (বড়সড় অটোর মতো দেখতে,দশ জন বসা যায়) করে গেলাম অ্যালকাজার শো।
 |
Alcazar Show |
বিরাট অডিটোরিয়ামে শুধু লেডি বয়দের এমন চোখ ধাঁধানো প্রফেশনাল শো পৃথিবীর আর কোনো দেশে নেই। শোতে মন ভোলানো মিউজিকের সাথে ভালো লাগে থাইল্যান্ডের এবং অন্যান্য দেশের ট্র্যাডিশনাল কস্টিউম। মুগ্ধতা, সম্মানে মাথা নত হয়ে যায় যখন দেখি “বুমরো বুমরো” মিশন কাশ্মীরের হিন্দী গানের সাথে নাচ। বড় কষ্ট হয়েছিল আমাদের দেশের লেডি বয়দের কথা ভেবে। আমরা কেন ভাবতে পারি না এভাবে!
 |
The Performers |
শো চলাকালীন বিনামূল্যে পরিবেশিত ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গে দেখা অবিশ্বাস্য দক্ষতায় চোখের পলকে বদলে যাওয়া স্টেজ, ব্যাক ড্রপ আর শিল্পীদের অসাধারণ নিখুঁত পারফরম্যান্স দেখার ইচ্ছে আবারও আছে। শো শেষে শিল্পীদের সাথে ছবি তোলা যায় বাট-এর (ওখানকার মুদ্রা) বিনিময়ে। পাটায়ার "ওয়াকিং স্ট্রীট" –এর দুদিকে নারী,পুরুষ এবং লেডি-বয়রা হাজির নানান সাজে নানান ভঙ্গিমায় রাত-কামনার আমন্ত্রণে। রাতজাগা শহরে রাস্তার দু'ধারে সারিসারি খোলা রেস্তরাঁ, পার্লার, দোকান কী নেই। রাস্তার উপরেই বিকিনি পরা সুন্দরীদের নাচ দেখে কেমন যেন ভয় হয়! এতো খোলাখুলি যৌন ব্যবসা! এজন্যই বোধহয় জগৎ জোড়া এ-শহরের নাম, ভোগবাদ ও শরীরবাদের জন্য।
পরের দিন কোরাল আইল্যান্ড।
 |
Paragliding |
অ্যাডভেঞ্চার-প্রিয় আমার মন বারবার নেচে উঠেছে স্পিডবোটে পাটায়া বিচ থেকে কোরাল আইল্যান্ড যাবার পথে। মাঝ সমুদ্রে প্যারাগ্লাইডিং, গাইড সহ সমুদ্রে ডুব দেওয়া, স্কুটারে সমুদ্রে ঘোরা উফ্ কী যে উপভোগ করেছি ভাবলে এখনও রোমাঞ্চ হয়। ছোটো আমাদের ছেলে অদ্রিজ। সেও খুব খেলেছে সাদা মিহি বালি নিয়ে আর আমরা মন ভরে দেখেছি ওর খেলা! সী-বিচে রঙীন ছাতার নীচে বসে। যদিও স্পিডবোটে ও খুব ভয় পেয়েছিল। ফিরে ইন্ডিয়ান লাঞ্চ। এর দামও প্যাকেজের ভেতরেই। সেদিন ফিরে এলাম ব্যাঙ্কক। পরের দিন অর্ধেক বেলা ব্যাঙ্কক শহর ঘোরা।
 |
Wat Arun |
আছে বেশ কিছু বৌদ্ধ মন্দির।।"ওয়াট অরুণ” তার মধ্যে বিখ্যাত। বিশালাকার সোনালি শায়িত বুদ্ধমূর্ত্তি যেমন ভালো লাগে তেমনই অবাক করে মন্দিরের দেওয়ালের সাবধানবাণী "বি অ্যাওয়ার অফ পিক পকেট"! অর্ধেক বেলা এজেন্টের গাইড ঘোরালো।
বাকি বেলা নিজেরা না ঘুরলে অনেক কিছু অদেখা অজানা থেকে যেত।
 |
Street Food |
এই যেমন বেশ কিছু রাস্তা জুড়ে আছে আমাদের গড়িয়াহাট বা নিউমার্কেটের মত হকাররা। আর আছে হাজারো রকমের লোভনীয় এবং সুস্বাদু "স্ট্রীট ফুড" (চিংড়ি,কাঁকড়া,চিকেন লেগ পিস,চাউমিন,বিভিন্ন ধরণের সসেজ) যা পাওয়া যায় খুবই কম খরচে,মাত্র পাঁচ বাট থেকে শুরু। আমাদের প্রি প্ল্যান অনুযায়ী আমরা ব্যাঙ্ককে ছিলাম শনিবার। উদ্দেশ্য ঘুরে দেখা এশিয়ার "লার্জেস্ট উইকেন্ড মার্কেট" চাটুচাক-শনি রবি দুদিন বসে।
 |
Chatuchak Market |
জামাকাপড়, খাবার, জুতো, কিউরিও, ব্যাগ, গয়না, ঘর সাজানোর জিনিস আরো হাজারো। বিরাট এলাকা জুড়ে এই মার্কেট কয়েক ঘন্টাতেও দেখে শেষ করা যায় না। সস্তায় দারুণ সব জিনিস কেনা যায়। তবে ব্র্যান্ডেড জিনিস পাওয়া যায় না, তার জন্য আছে এমবিকে মার্কেট। মার্কেট ঘুরে বিদ্ধস্ত হয়ে সুকুমভিট রোডের হোটেলে ফিরলাম মেট্রো করে। মেট্রোর পাশের পার্কিং এরিয়া আমার বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছে। আমরা এইটুকু শুধু ঘুরেছি। বাকি রয়ে গেছে ফ্লোটিং মার্কেট, ক্রোকোডাইল ফার্ম, আর কিছু মন্দির।
পরের দিনের সিঙ্গাপুরের টিকিট যে আগেই কাটা ছিল।
বিদিশা ঘোষ
১৯৯৪
travelogue section ta amar sobcheye priyo, ar tomra dujonei bes interesting kore likhecho, safari world er interesting 2-1ta incident share korle aro valo lagto :)
ReplyDeleteta amar ekta prosno ache.. Deep fried insect ki tomra try korechile? :P
hya ami promitar songe aro ekta proshno jog korchi, kemon khete chhilo??
ReplyDelete