আমার টিফিনবক্স ছিল স্টিলের। গোল, চৌকো নাকি ডিম্বাকৃতি ঠিক মনে নেই। বাদবাকি বন্ধু প্রায় সকলেরই টিফিনবক্স ওর’ম। প্লাষ্টিক টিফিনবক্স আনত হাতে গোনা ক’জন। আমরা যারা লঞ্চে করে গঙ্গা পেরিয়ে স্কুলে আসতাম তাদের আবার দুটো টিফিনবক্স বরাদ্দ ছিল। দ্বিতীয়টা মায়েরা নিয়ে আসতেন লঞ্চে ফেরার সময়ে খাওয়ার জন্য। যারা অনেক দূর থেকে স্কুলবাসে যাতায়াত করত অনেকেরই ওরকম ফিরতি পথে খাওয়ার জন্যে দ্বিতীয় একটা টিফিনবক্স থাকত।
ক্লাস ফাইভে আমরা নতুন যারা ভর্তি হয়েছিলাম, টিফিনের সময়ে কয়েকজন একটা বড় গোল করে বসতাম ক্রিস্টিন ভবনে। সবাই যে যার টিফিন অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে খেত। এই বৃত্তের পরিধি কমবেশি বদলেছে ক্রমান্বয়ে। তবে ভাগ করে খাওয়াটা বহাল ছিল সেই ক্লাস টেন অবধি।
প্রত্যেকের টিফিনের নিজস্ব ধরন ছিল। আমার যেমন সারা স্কুলজীবনের সিংহভাগ কেটেছে রুটি তরকারি খেয়ে। তরকারি, মূলত আলুর। ঘুরেফিরে একইরকম রান্না। কিন্তু মায়ের তরকারির স্বাদ এমন ভালো ছিল যে আমার টিফিন নিয়ে সেই কলেজ জীবন অবধি বন্ধুরা কাড়াকাড়ি করেছে। সত্যি বলতে কী, ‘টিফিনে অন্য কিছু চাই' বলে সেরকম দাবীও করিনি কোনওদিন মায়ের কাছে। রুটি অনেকেই আনত। অনেকে আবার লুচি বা পরোটা আর মিষ্টি আনত নিয়মিত। অনেকের থাকত হলুদ দেওয়া চাউমিন, তাতে আবার বাদাম দেওয়া। হাতে গোনা কয়েকজনের বরাদ্দ ছিল ফল। এক বন্ধুর টিফিনে থাকত গ্রীলড স্যান্ডউইচ আর মিষ্টি। কোনও অজ্ঞাত কারণে সে কোনওদিন নিজের বা অন্য কারও টিফিন খেত না। আমরা কয়জন অধীর আগ্রহে ওই অসম্ভব স্বাদু স্যান্ডউইচের জন্য অপেক্ষা করে থাকতাম। টিফিন খায় না জানতে পেরে দিদিরা টিচার্স রুমের সামনে এসে তার খাওয়া বাধ্যতামূলক করেন ক’দিনের জন্য। যদিও এর ফল খুব কিছু সুদূরপ্রসারী হয়নি। ক’দিন বাদেই আমরা আমাদের বহু আকাঙ্ক্ষিত স্যান্ডউইচের ভাগ পেতে শুরু করি। জীবনে প্রথমবার খেয়ে অভিভূত হয়েছি এরকম অনেককিছু ইশকুলের এই “টিফিন আওয়ার” থেকে পাওয়া।
প্রত্যেকের টিফিনের নিজস্ব ধরন ছিল। আমার যেমন সারা স্কুলজীবনের সিংহভাগ কেটেছে রুটি তরকারি খেয়ে। তরকারি, মূলত আলুর। ঘুরেফিরে একইরকম রান্না। কিন্তু মায়ের তরকারির স্বাদ এমন ভালো ছিল যে আমার টিফিন নিয়ে সেই কলেজ জীবন অবধি বন্ধুরা কাড়াকাড়ি করেছে। সত্যি বলতে কী, ‘টিফিনে অন্য কিছু চাই' বলে সেরকম দাবীও করিনি কোনওদিন মায়ের কাছে। রুটি অনেকেই আনত। অনেকে আবার লুচি বা পরোটা আর মিষ্টি আনত নিয়মিত। অনেকের থাকত হলুদ দেওয়া চাউমিন, তাতে আবার বাদাম দেওয়া। হাতে গোনা কয়েকজনের বরাদ্দ ছিল ফল। এক বন্ধুর টিফিনে থাকত গ্রীলড স্যান্ডউইচ আর মিষ্টি। কোনও অজ্ঞাত কারণে সে কোনওদিন নিজের বা অন্য কারও টিফিন খেত না। আমরা কয়জন অধীর আগ্রহে ওই অসম্ভব স্বাদু স্যান্ডউইচের জন্য অপেক্ষা করে থাকতাম। টিফিন খায় না জানতে পেরে দিদিরা টিচার্স রুমের সামনে এসে তার খাওয়া বাধ্যতামূলক করেন ক’দিনের জন্য। যদিও এর ফল খুব কিছু সুদূরপ্রসারী হয়নি। ক’দিন বাদেই আমরা আমাদের বহু আকাঙ্ক্ষিত স্যান্ডউইচের ভাগ পেতে শুরু করি। জীবনে প্রথমবার খেয়ে অভিভূত হয়েছি এরকম অনেককিছু ইশকুলের এই “টিফিন আওয়ার” থেকে পাওয়া।
পরবর্তী জীবনে দক্ষিণ ভারতে থাকার সুবাদে দেখেছি বেশিরভাগ স্কুল-কলেজ-অফিসের টিফিন হল ভাত ও আনুষঙ্গিক ডাল-তরকারি-দই ইত্যাদি। বাঙালিরা ভেতো হলেও ভাত নিয়ে তাদের নানারকম ছুৎমার্গ আছে। হয়তো সে কারণেই আমরা স্কুলে পড়াকালীন টিফিনে ভাত আনার সেরকম রেওয়াজ ছিল না। এখন চিত্রটা বদলেছে কিনা জানা নেই অবিশ্যি।
চারদিকে যখন দেখি হালকা ডিজাইনের নানান সুবিধাওলা প্লাস্টিকের টিফিনবক্স ক্রমশ হারিয়ে দিচ্ছে স্টিলের টিফিনবক্সদের, কেমন জানি মন খারাপ হয়! এরা রংচঙে, লিকপ্রুফ, খাবার গরম রাখে বেশিক্ষণ।
তাই এদের চাহিদাও বেশি। কিন্তু আমরা আমাদের টিফিনবক্স নিয়ে সত্যি খুশি ছিলাম। চারদিকে প্লাস্টিকের অস্বাস্থ্যকর এবং পরিবেশবিরোধী কুফল নিয়ে সচেতনতা শুরু হয়নি তখনও। দু’ যুগ আগে তার প্রয়োজনও বোধহয় ছিল না তেমন।
ডালিয়া ঘোষ দস্তিদার [১৯৯৬]
ভীষণ ক্রিস্প একটা লেখা! একটুও কপি এডিট করতে হয়নি। পরিচ্ছন্ন এবং ব্যালেন্সড। :)
ReplyDeleteDARUN....
ReplyDeletetiffin khaoya r time ta khub mone pore. biseshto amr ak bandhu saheli koley chicken sandwich, pau vaji anto majhe majhe. sei din gulo amader 3-4 joner j khaoyar group chilo tader modhhye akdom karakari pore jeto. amra aktu sandwich erjonno hatahati kortam. j tiffin ta anto tar vagye o khub kom jutto. tabu khub annodo hoto ai dingulo te.ar amr bari te baba chemistry r lok bole aluminium foil e khabar pack kore diten majhe majhe. amra takhn aluminium foil er sange oto ta parichito chilam na. tai sobai amak ask korto" agulo ki? kotha thek kinechis " . khub sundar chilo dingulo. ar akek jon akek rokom tiffin anto to darun khaoya daoya hoto amader.
ReplyDelete